নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ ৬৭ দিন বন্ধ থাকার পর রাজধানীসহ সারা দেশেই সড়কে নেমেছে গণপরিবহন। ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করে মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারির গত সোমবার থেকে পুরোদমে গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের যেসব নির্দেশনা মানার শর্তে ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করা হয় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনা মান্য করা। কিন্তু রাজধানীতে চলাচলকারী অধিকাংশ পরিবহনকেই সেসব নির্দেশনা মানতে দেখা যায়নি। কোনো কোনো বাসের ভেতরে যাত্রীদের শারীরিক দূরত্ব কিছুটা মানা হলেও, ওঠানামার ক্ষেত্রে হেলপার, কন্ডাক্টরদের সঙ্গে যাত্রীদের যথাযথ দূরত্ব মানা হচ্ছে না। গণপরিবহনগুলো যেখানে-সেখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠাচ্ছে। হেলপার বাসের দরজাতেই দাঁড়িয়ে থাকছেন, যাত্রীরা গা ঘেঁষে উঠে যাচ্ছেন। নামার সময়ও একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।
বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত রাজধানীর শ্যামলী, কল্যাণপুর ও কলেজগেট এলাকায় সরেজমিন দেখা যায়, যত্রতত্র যাত্রী উঠানো ও নামানো হচ্ছে। অধিকাংশ পরিবহনে নেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা জীবাণুনাশক স্প্রের ব্যবস্থা। হেলপার কিংবা কন্ডাক্টর টেনে টেনে বাসে যাত্রী তুলছেন সেই পুরনো অভ্যাসেই। তবে কোনো কোনো বাসের আসন ফাঁকা রাখার নির্দেশনা পালন করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্যবিধি পালন হচ্ছে কি না সেটি দেখার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো মনিটরিং চোখে পড়েনি।
সকালে সায়েদাবাদ টার্মিনাল থেকে গণপরিবহনে ঢাকার বিভিন্ন এলাকার উদ্দেশে বাসে যাত্রীদের উঠতে দেখা গেছে। হেলপাররা আগের মতো জোর করে টেনে টেনে যাত্রী তুলছেন। এ সময় কোনো পরিবহনে জীবাণুনাশক ছিটাতে দেখা যায়নি। তবে পরিবহনগুলো বের হওয়ার আগেই জীবাণুমুক্ত করে রাখা হয়েছে বলে দাবি পরিবহন শ্রমিকদের।
শাহবাগ এলাকার শ্রমিকরা জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষ খুব বেশি পরিবহনে উঠছেন না। যাদের একান্ত প্রয়োজন তারাই গণপরিবহন ব্যবহার করছেন। রজনীগন্ধা বাসের চালক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘যাত্রী কম। আমরাও মানুষকে ডাকাডাকি করে পরিবহনে তুলছি না। মানুষকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে অনুরোধ করছি। বাসের ফাঁকা ফাঁকা স্থানে বসতে অনুরোধ করছি। যাদের মুখে মাস্ক নেই তাদের উঠতে দিচ্ছি না।’
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহ বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি অনেক ভালো। যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সেগুলো পুরোপুরি পালনের চেষ্টা চলছে। দূরপাল্লার গাড়িগুলোও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালানো হচ্ছে। মালিক সমিতির পক্ষ থেকে সব স্থানেই তদারকি করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, মহাখালীসহ বিভিন্ন টার্মিনালে জীবাণুমুক্ত টানেল স্থাপন করা হয়েছে। যাত্রীদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আর যারা স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করবে তাদের গাড়ি রাস্তায় নামতে দেওয়া হবে না।