পশ্চিমবঙ্গ সংবাদদাতা:হাথরসের ঘটনার প্রতিবাদে শনিবারই কলকাতায় তৃণমূলের প্রতিবাদ মিছিল করেছিলেন পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আক্রমণ শানিয়েছিলেন বিজেপির বিরুদ্ধে। দেশের শাসক দলকে মহামারীর সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। দেশে গণতন্ত্র নেই বলেও অভিযোগ করেছিলেন। এবার সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন বেশ কয়েকজন বিজেপি নেত্রী। রাজ্যের অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন লকেট চট্টোপাধ্যায়, অগ্নিমাত্র পাল এবং ভারতী ঘোষ। এই রাজ্যে নারীর কোনও নিরাপত্তা নেই বলেও দাবি করেন তাঁরা।
বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোাধ্যায় বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর যদি সৎ সাহস থাকত, তা হলে তিনি কামদুনি, গেদে, গাইঘাটার ধর্ষিতা নারীদের জন্যেও হাঁটতেন। কিন্তু সেই সাহস তাঁর নেই।’ তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে রীতিমতো কটাক্ষ করে বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশের জন্য যদি ৪ কিলোমিটার তাঁকে হাঁটতে হয়, তবে তো পশ্চিমবঙ্গের জন্য ৪ হাজার কিলোমিটার হাঁটা উচিত। কারণ, এই রাজ্যে যত নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে, তার হিসেব পেশ করলে ইতিহাস হয়ে যাবে। এই রাজ্যে যত ধর্ষণের ঘটনা ঘটে, তা আর কোথাও ঘটে না।’ মুখ খুলেছেন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পালও। তিনি বর্তমানে করোনা সংক্রমিত। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেই অবস্থাতেই এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর বয়স হয়েছে। তিনি সিনিয়র সিটিজেন। তাই হয়তো তাঁর ভুলে যাওয়ার রোগ ধরেছে। তা নিয়ে চিন্তা হচ্ছে আমাদের। নইলে বাংলাকে তিনি কোনও ভাবেই সুরক্ষিত রাজ্য বলতেন না।’
মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফর নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অগ্নিমিত্রা। কেন উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েও মুখ্যমন্ত্রী রাজগঞ্জের নির্যাতিতার পরিজনদের সঙ্গে দেখা করলেন না সেই প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘এই রাজ্যের শাসক দলের নেতা ও মন্ত্রীরা কার্যত ধর্ষণকে প্রশ্রয় দেন। উত্তরপ্রদেশের হাথরসের দলিত তরুণীর জন্য মিছিল করলেও কেন মুখ্যমন্ত্রী বাংলার নির্যাতিতাদের জন্য পথে নামছেন না?’ তাঁর প্রতিটি প্রশ্নের জবাবও দাবি করেছেন অগ্নিমিত্রা। মুখ খুলেছেন বিজেপি নেত্রী তথা প্রাক্তন আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষও। তিনি অভিযোগ করেন, ‘রাজ্যে নারী সুরক্ষা বলতে কিছুই নেই। এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজের ঘরের মেয়ের নিরাপত্তার কথা ভাবেন না। পাশের বাড়ির মেয়ের জন্য পথে নামেন। এ থেকেই বোঝা যায়, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্য কী?’
এর পর তিনি উল্লেখ করেন শনিবারের একটি ঘটনার কথা। বলেন, ‘গতকালই নোদাখালিতে এক বিজেপি নেত্রী ও তাঁর সঙ্গী কয়েকজন মহিলার ওপরও দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী এ–সব কথা জানেন না? নোদাখালি তো মুখ্যমন্ত্রীর যুবরাজের নিজের এলাকা হিসেবে পরিচিত।’ এদিন বিভিন্ন জেলায় রাজ্যে নারীরা নিরাপত্তাহীন বলে অভিযোগ করে বিজেপির মহিলার মোর্চা মিছিল করে। শুধু নেত্রীরাই নন, বিজেপি নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘করোনার চেয়েও ভয়ঙ্কর’ বলেও বেফাঁস মন্তব্য করেও বসেন।