রাঙামাটি প্রতিনিধি: পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে ‘রোডম্যাপ’ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সহযোগী সংগঠন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)। রোববার (২৭ নভেম্বর) বিকালে রাঙামাটি জেলাপ্রশাসক কার্যালয়ের প্রধান ফটকে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে এ দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
সমাবেশে পিসিপির নেতারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৫ বছর অতিবাহিত হলেও চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে সরকারের সদিচ্ছা দেখছি না। চুক্তির মোট ৭২টি ধারার মধ্যে মাত্র ২৫টি ধারা বাস্তবায়িত হয়েছে। বাকী ১৮টি ধারা আংশিক বাস্তবায়িত হলেও অবশিষ্ট ২৯টি ধারা সম্পূর্ণভাবে অবাস্তবায়িত অবস্থায় রয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, চুক্তিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদকে নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিশেষ শাসনব্যবস্থা প্রবর্তনের বিধান থাকলেও এসব পরিষদে সাধারণ প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা, পুলিশ, ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা, বন ও পরিবেশ, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ প্রশাসনিক ক্ষমতা হস্তান্তর না করায় এখনো বিশেষ শাসনব্যবস্থার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ গড়ে উঠতে পারেনি।
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ৩ দফা দাবি জানানো হয়েছে। দাবিসমূহ হল- অতি দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণাপূর্বক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পূর্ণাঙ্গ ও যথাযথ বাস্তবায়ন করা, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশন কার্যকর করা এবং ৬টি ক্যান্টনমেন্ট বাদে সকল অস্থায়ী সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার ও ‘অপারেশন উত্তরণ’ প্রত্যাহার করা।
সমাবেশে পিসিপি রাঙামাটি জেলার সহ-সভাপতি জিকো চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পিসিপির কেন্দ্রীয় সভাপতি সুমন মারমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতি রাঙামাটি জেলার সাধারণ সম্পাদক সুমিত্র চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন রাঙামাটি জেলার সভাপতি ম্রানু মারমা, পিসিপি রাঙামাটি শহর শাখার সাধারণ সম্পাদক সুরেশ চাকমা, রাঙামাটি জেলার সদস্য সুমন চাকমা, কলেজ শাখার সদস্য তরুণ জ্যোতি চাকমাসহ আরও অনেকেই।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টায় জেলা শহরের জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গণ থেকে একটি মিছিল শুরু হয়। মিছিলে পাহাড়ি তরুণ-তরুণীরা বিভিন্ন দাবিসম্বলিত ফেস্টুন তুলে ধরেছেন। জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গণ থেকে মিছিলটি জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র বনরূপা ঘুরে জেলাপ্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের দাবি নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সই করে জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)। কিন্তু চুক্তির দুই দশক পরেও পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসছে সন্তু লারমার জেএসএস।