নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজধানীর গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতাল চত্বরে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য তাঁবু টাঙিয়ে যে অস্থায়ী ইউনিট স্থাপন করা হয় সেটি অগ্নিপ্রতিরোধক ছিল না। ঝুঁকিপূর্ণ ও নিম্নমানের তাঁবু ব্যবহারের ফলে আগুন লাগার মাত্র দেড় মিনিটের মধ্যে করোনা ইউনিট ভস্মীভূত হয়। ত্রুটিপূর্ণ বৈদ্যুতিক সংযোগের কারণে ব্যবহার অযোগ্য পুরনো একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রে প্রথম অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়। ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকান্ডে ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনায় কর্তৃপক্ষের চরম গাফিলতির এমন তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে।
বৃহস্পতিবার (১১ জুন) পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন ডিএমপি সদর দপ্তরে জমা দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, আগুন লাগার পর অস্থায়ী ওই ইউনিটে দায়িত্বরত চিকিৎসক ও নার্সরা নেভানোর চেষ্টা না করে দ্রুত পালিয়ে যান। তবে আরাফাত নামে একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী আগুন নেভানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী (১২ জুন) জানান, হাসপাতালটির ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা (সিসি ক্যামেরা) পর্যালোচনা করে অগ্নিকান্ডের সময় কার কী ভূমিকা ছিল, সে সম্পর্কে পুলিশের তদন্ত কমিটি নিশ্চিত হয়েছে। শর্ট সার্কিটের কথা বলা হলেও ব্যবহার অযোগ্য পুরাতন একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গত ২৭ মে রাতে ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনা ইউনিটে অগ্নিকান্ডের পর পুলিশের গুলশান বিভাগ তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে।
তদন্তকালে পুলিশ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, নিহতদের স্বজন ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসহ মোট ৩৮ জনের জবানবন্দি রেকর্ড করেছে।
এর আগে গত ১০ জুন একই ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করে। সেই প্রতিবেদনেও ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির তথ্য উঠে আসে।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ মে ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকান্ডের পর তদন্তের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এসপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) আব্দুল আহাদকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অপর দুই সদস্য হলেন সহকারী কমিশনার (গুলশান) রফিকুল ইসলাম ও গুলশান থানার ওসি কামরুজ্জামান।