নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জালিয়াতি করে খেলাপি গ্রাহকদের ব্যাংক ঋণ পেতে সহায়তাকারী চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
তারা হলো- মো. মজিদ, মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, মো. সুমন পারভেজ, সিদ্ধার্থ শংকর সূত্রধর ও মো. আনোয়ারুল ইসলাম। তাদের কাছে ১২টি জাল এনআইডি পাওয়া যায়। শনিবার রাতে মিরপুর চিড়িয়াখানা রোডের ডি-ব্লক এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
ডিবির লালবাগ বিভাগের এসি মধুসূদন দাস বলেন, গ্রেফতাররা অর্থের বিনিময়ে জাল এনআইডি তৈরি করে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে খেলাপি গ্রাহকদের সহায়তা করত। তাদের বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় মামলা করা হয়েছে। রোববার ওই মামলায় আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হলে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গ্রেফতার সিদ্ধার্থ ও আনোয়ারুল ই-জোন কোম্পানির মাধ্যমে ২০১৭ সালে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে খিলগাঁও ও গুলশান অফিসে ডাটা অ্যান্ট্রি অপারেটর হিসেবে নিয়োগ পায়। ইসির সফটওয়্যার ব্যবহার করে তারা সহজেই জাল এনআইডি তৈরি ও সেন্ট্রাল সার্ভারে অ্যান্ট্রি দিতে পারত। জালিয়াতির মাধ্যমে একই ব্যক্তির দুটি ভিন্ন এনআইডি নম্বর তৈরি হওয়ায় ঋণ আবেদনে খেলাপি গ্রাহকদের তথ্য ব্যাংকে গোপন থাকত।
ডিবির এ কর্মকর্তা বলেন, জাল এনআইডি তৈরির জন্য চুক্তি করত সুমন ও মজিদ। জাল এনআইডি বাবদ ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা এবং ব্যাংক থেকে পাওয়া মোট ঋণের ১০ শতাংশ নিত চক্রের সদস্যরা। ইসির সার্ভারে অ্যান্ট্রি করতে প্রতিটি এনআইডির জন্য ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা করে নিত সিদ্ধার্থ ও আনোয়ারুল। তারা এ পর্যন্ত ৪০ থেকে ৫০টি দ্বৈত জাল এনআইডি তৈরি করেছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।
ইসির সার্ভারে কোনো ব্যক্তির নাম দুবার নিবন্ধিত হলে তা মুছতে বছরখানেক সময় লেগে যায়। এই সময়ের মধ্যে খেলাপি গ্রাহকরা অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিত। সম্পূর্ণ নতুন এনআইডি নম্বর হওয়ায় তাদের ঋণ খেলাপির বিষয়টি ব্যাংক ভেরিফিকেশনে ধরা পড়ত না। গ্রেফতার পাঁচজন একটি গ্রুপ করে দীর্ঘদিন ধরে জাল এনআইডি তৈরির কার্যক্রম চালিয়ে আসছে বলে স্বীকার করেছে।