নিজস্ব প্রতিবেদক: সৌদি আরবে গৃহকর্মী হিসেবে গিয়ে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে কিশোরী উম্মে কুলসুমের (১৪) মৃত্যুর ঘটনায় তাকে দেশটিতে পাঠানো রিক্রুটিং এজেন্সি মেসার্স এমএইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালে অভিযান চালিয়েছে র্যাব। এ সময় মালিক মকবুল হোসাইন ও তার সহযোগী তারেকসহ দুজনকে আটক করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় রাজধানীর ফকিরেরপুলে থাকা এজেন্সিটির কার্যালয়ে ওই অভিযান চালানো হয়। অভিযানের নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার নূরপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে কুলসুম ১৩ বছর বয়সি তরুণী হলেও তাকে ২৫ বছর দেখিয়ে পাসপোর্ট বানিয়ে সৌদিতে পাঠায় এজেন্সি মেসার্স এমএইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল। তাকে সেখানে একটি বাসায় কাজ করা বাবদ ৩০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেয়নি। উল্টো বাসার মালিক তাকে যৌন নিপীড়নে বাধ্য করত। নির্যাতনের কারণে কুলসুমকে ফিরিয়ে আনার জন্য রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার পরও তাদের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পায়নি পরিবার।
এর মধ্যে চার মাস আগে সৌদি আরবে গৃহকর্তা ও তার ছেলে মিলে কুলসুমের দুই হাঁটু, কোমর ও পা ভেঙে দেয়। এর কিছুদিন পর একটি চোখ নষ্ট করে রাস্তায় ফেলে দেয়। সেখান থেকে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তিনি আরও জানান, সৌদি আরবে কুলসুম নির্যাতনের শিকার হয়ে ৯ আগস্ট হাসপাতালে ভর্তি হয়। তার পরিবার স্থানীয় দালালের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও এমএইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল তাদের প্রতি কোনো সহানুভূতি দেখায়নি।
১৭ আগস্ট মারা যায় কুলসুম। ফকিরেরপুলের অফিসে অভিযান চলার সময় ১০-১২ জন ভুক্তভোগীর অভিযোগ পান ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির মালিকের বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় মামলা রয়েছে। মামলাটি সিআইডিতে তদন্তধীন বলেও জানান তিনি।