প্রত্যয় ডেস্ক, বদরুল ইসলাম বিপ্লব, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ কোমরে রাখা টাকা ছিনিয়ে নিতে ঠাকুরগাঁও সদরের দেবিপুর মোলানী গ্রামের মুদি দোকানদার নূর ইসলামকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবু তাহের মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মাত্র ১০ দিনের মাথায় হত্যা রহস্য উদঘাটন এবং ২ জন আসামী গ্রেফতার ও তাদের দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদানের কথা জানান ওই কর্মকর্তা।
তিনি আরো জানান, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দেবিপুর মোলানী গ্রামের আলহাজ্ব আবুল হাসেম এর ছেলে নুর ইসলাম (৪৫) একজন মুদি দোকানদার। তিনি বাড়ির অনতিদূরে বৈরাগী বাজরে ব্যবসা করতেন। তার লাশ গত ১১ অক্টোবর তার মায়ের কবরের পাশ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় মৃতের বড়ভাই রুহুল আমিন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি তানভিরুল ইসলাম জানান, একটা চ্যালেন্জ নিয়ে নিবিড়ভাবে তদন্তকাজ শুরু করা হয় এবং ১০ দিনের মাথায় হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে।
তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে নূর ইসলাম হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে ভ্যান চালক সেলিম রেজা (৩৬) ও ওষুধ কোম্পানীর সেলসম্যান আব্দুল মান্নান ওরফে মাহাতাব (৪০) নামে ২জনকে আটক করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে গত ২১ অক্টোবর সিনিয়র চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আরিফুৃল ইসলাম এর নিকট কা:বি: ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় এবং দোষ স্বীকার করে।পরে আদালত তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করে। তার হলেন-দেবীপুর ওস্তাদপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল আলিমের ছেলে সেলিম রেজা (৩৬) ও একই গ্রামের মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে আব্দুল মান্না ওরফে মাহাতাব(৪০)।
পুলিশের তদন্ত এবং সন্দিগ্ধ আসামীদের স্বীকারোক্তিতে প্রকাশ পায় যে, মৃত নুর ইসলাম টাকা পয়সা বাড়ি বা দোকানে না রেখে সব সময় কোমরে রাখত। সে কারণে ধৃত আসামীরা তার কাছ থেকে টাকা পয়সা ছিনিয়ে নিতে পরিকল্পনা করে এবং ঘটনার দিন রাতে সাইকেল নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে কবর স্থানের নির্জন জায়গায় মুদি দোকানী নূর ইসলাম পৌছলে তাকে আটক করে মারধোর করে এবং শাসরুদ্ধ করে হত্যা করে লাশ কবর স্থানের পুরাতন কবরে ফেলে দেয়। সেই সাথে মৃতের বাই সাইকেল ঘটনাস্থলের পাশে একটি পুকুরে ফেলে দেয়। আর কোমরে রাখা টাকা হাতিয়ে নিতে তারা উভয়ে ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়ে নেয়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সদর থানার ওসি তানভিরুল ইসলাম, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) একেএম আতিকুর রহমান, পুলিশ পরিদর্শক(অপারেশন) জিয়ারুল ইসলাম, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রনি কুমার পাল, জেলার প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।