1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় অপরূপা কলকাতা, কিন্তু কল্লোলিনী নয়

  • Update Time : শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২০
  • ২৩২ Time View

বিশেষ সংবাদদাতা,কলকাতা: কলকাতা হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত কতখানি রক্ষিত হবে, তা এখনও নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে দুর্গাপুজোর প্রথম দিন ষষ্ঠীতে সন্ধ্যার পর রাত যত বেড়েছে, ততই শুনশান হয়ে গিয়েছে মহানগরী। গাড়ি চলার বিরাম না থাকলেও, দু’চাকা নিয়ে যৌবনের ছুটে চলা থাকলেও পুজোর আনন্দ উপভোগ করা দর্শকদের তেমন দেখতে পাওয়া গেল না এদিন। রাতের দিকে রাস্তাঘাট নির্জন থেকে একেবারে জনশূন্য হয়ে যেতে শুরু করে। কলেজ স্কোয়ার থেকে বাগবাজার সর্বজনীন, কুমোরটুলি থেকে তেলেঙ্গাবাগান, একডালিয়া এভারগ্রিন থেকে সিংহি পার্ক, ম্যাডস্ক স্কোয়ার থেকে যোধপুর পার্ক, চেতলা অগ্রণী থেকে নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘ, হাজরা পার্ক থেকে খিদিরপুরের পল্লী শারদীয়া— সর্বত্রই ছিল একই ছবি।

যদিও পুজোগুলির সেজে ওঠায় কোনও খামতি নেই। চেতলা অগ্রণীর পুজো করোনাকেই করেছে তাদের থিম। নাম দিয়েছে দুঃসময়। হাজরা পার্কের থিম সহজিয়া। মণ্ডপ তৈরি হয়েছে ছোটদের আঁকা দিয়ে। তাদের কথা মাথায় রেখেই প্রতিমা তৈরি করেছেন শিল্পী কৃশানু পাল। প্রতিমার বৈচিত্রে বিস্ময় তৈরি করেছে নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘ। প্রতিমা শিল্পী ভবতোষ সুতার। হরিদেবপুরের বিবেকানন্দ পার্ক অ্যাথলেটিক ক্লাবের পুজো এবার সুবর্ণ জয়ন্তীতে। মানুষের পাশে দাঁড়াতেই তাদের এবারের থিম সঙ্কল্প। মণ্ডপসজ্জা ও প্রতিমা নির্মাণে শিল্পী সুশান্ত পাল। যোধপুর পার্কের ৯৫ পল্লীর থিম লৌকিক। মণ্ডপসজ্জায় শিল্পী সুশান্ত পাল। বড়িশা সর্বজনীনের এ বছরের ভাবনায়ও করোনা কাল প্রভাব ফেলেছে। সেখানে জীবনের রূপান্তরকেই করে তোলা হয়েছে থিম। এই ভাবনা ও তা রূপায়ণে রয়েছেন শিল্পী দেবাশিস বারুই।

ঠাকুরপুকুর এসবি পার্কের পুজোকে এবার সাজিয়েছেন শিল্পী পার্থ দাশগুপ্ত। এই পুজোয় দুর্গা ও মহিষাসুরের যুদ্ধের ঘটনা তুলে ধরে দেখানো হয়েছে সাধারণ মানুষের চিরন্তন জীবন সংগ্রামের কাহিনি। হরিদেবপুরের অজেয় সংহতির থিম সংহতি। মহামারীর বিরুদ্ধে সকলকে এক হয়ে লড়াই করার ডাক দিয়েছে এই পুজো। মণ্ডপ ভাবনায় শিল্পী দীপাঞ্জন দে। প্রতিমা শিল্পী রাজেশ মণ্ডল। ভবানীপুরের অবসর সর্বজনীনের পুজোয় থিম প্রশ্ন। মানুষের জীবন নিয়ে সেই প্রশ্নগুলি এসেছে শিল্পী শিবশঙ্কর দাসের ভাবনায়। শুধু তো সর্বজনীন নয়, পারিবারিক পুজোগুলি এবারও হচ্ছে। তবে সর্বত্রই প্রভাব ফেলেছে এই কোভিড–১৯ ভাইরাস। কোনও কোনও পরিবারের পুজো হচ্ছে অনাড়ম্বর ভাবে, আবার কোনও কোনও পুজো হচ্ছে আড়ম্বরের সঙ্গে। তবে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে চলছে প্রায় প্রত্যেক পুজোই। যেমন বলা যায় শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজোর কথা।

বহুদিন আগে শুরু হয়েছিল শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো। সালটা ছিল সেই ১৭৫৭। রাজা নবকৃষ্ণ দেবের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এই বাড়ির পুজো। এ বছর এই পুজো পড়েছে ২৬৪ বছরে। তবে করোনা আবহে স্বাস্থ্য বিধি মেনে অনেকটাই পরিবর্তন এসেছে এবারের পুজোয়। বাইরে থেকে আসা দর্শনার্থীদের এ বছর ঠাকুর দালানে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে দর্শনার্থীদের পুজো দেখতে আসায় বারণ করা হচ্ছে না। সকলকেই প্রতিমা দর্শন করতে হচ্ছে মাঠ থেকেই। অঞ্জলির ক্ষেত্রেও কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। একসঙ্গে ১৫ থেকে ২০ জন অঞ্জলি দিতে পারবেন এবার। অন্যবারগুলিতে সংখ্যাটা ৭৫ থেকে ১০০ ছুঁয়ে ফেলত। এই পুজোর বিসর্জনেও ছিল একটি বিশেষ নিয়ম রয়েছে। জোড়া নৌকোয় মাঝগঙ্গায় নিয়ে যাওয়া হয় প্রতিমা। তার পর পরিবারের সদস্যরা পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে গঙ্গাবক্ষে প্রতিমা নিরঞ্জন করাতেন। এ বছর কোভিড পরিস্থিতিতে সেই নিয়মে বদল আনা হয়েছে। এবার ঘাট থেকে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হবে।

কোভিড–কারণে এ বছর টাকির ইছামতী নদীতে প্রতিমা বিসর্জন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। তবে বৃহস্পতিবার বিসর্জনের অনুমতি দিয়েছে টাকি পুরসভা। এদিন বসিরহাটের প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠক করেন টাকির পুর প্রশাসক। পরে নির্দিষ্ট শর্ত সাপেক্ষে ইছামতীতে বিসর্জনের অনুমতি দেয় প্রশাসন। পুরসভা জানিয়েছে, বড় নৌকোয় সর্বাধিক ২০ জন থাকতে পারবেন। ছোট নৌকোয় সংখ্যাটা হতে হবে ১৫ জনের মধ্যে। সকলকে মাস্ক পরে থাকতে হবে। নৌকোয় প্রত্যেক যাত্রীকে পারস্পরিক দূরত্ব বিধি মেনে থাকতে হবে। প্রতিটি নৌকোয় স্যানিটাইজারের ব্যবস্থাও রাখতে হবে। উল্লেখ্য, প্রতি বছরই বিভিন্ন জায়গা থেকে বহু মানুষ বিসর্জন দেখতে উপস্থিত হন টাকির ইছামতীতে। ইছামতীর অপর পাড়েই বাংলাদেশ। সে দেশের সাতক্ষীরায় অনেক প্রতিমা বিসর্জন হয়। আগে দুই বাংলা এদিন মিলেমিশে একাকার হয়ে যেত। তবে নিরাপত্তার কারণে কয়েক বছর ধরে এই বিসর্জনে কিছু কড়া নিয়ম বলবৎ করা হয়েছে দুই দেশের তরফেই।

প্রতি বছরের মতো এ বছরও শারদোৎসব উপলক্ষে সেজে উঠেছে শিয়ালদা এবং হাওড়া স্টেশন। আলোকমালায় অভিনব লাগছে বাংলার এই দুই প্রধান স্টেশনকে। তবে অন্য বছরগুলিতে এই উৎসবে যেমন সাধারণ দর্শকের যাওয়া আসায় জমজমাট থাকত দুটি স্টেশন, করোনা আবহে এবার সে সব উধাও। দূরপাল্লায় কয়েকটি ট্রেন আসা বা ছাড়ার সময়ই মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ দেখা গিয়েছে। অন্য সময়গুলিতে দুটি স্টেশনই ছিল ফাঁকা। পুজোর সময় এমন অলস স্টেশন দেখতে পাওয়াটা এতদিন কল্পনায়ও আনা যেত না। এবার যেন ব্যতিক্রম। জনহীন ও অথচ অপরূপা হয়ে ওঠা নীরব স্টেশন দুটিকে বড় বিষণ্ণ লেগেছে এদিন।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..