প্রবাস: পর্তুগালের অভ্যন্তরীণ প্রশাসন মন্ত্রণালয় এক রিপোর্টে জানিয়েছে, বর্তমানে দেশটিতে বিদেশি ভোটারের সংখ্যা ২৭ হাজার ৮৮৬ জন এবং দেশের মোট ভোটার ৯৩ লাখ ৬ হাজার ১২০ জন। সে হিসেবে মোট ভোটারের মাত্র শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বিদেশি ভোটার।
২০১৭ সালে স্থানীয় নাগরিকদের সংখ্যা বেশি থাকলেও বিদেশি ভোটারের সংখ্যা ছিল ২৭ হাজার ৮২৫ জন, চার বছর পর বেড়েছে মাত্র ৬১ জন। যদিও ২০১৭ সালের পর অভিবাসীদের আগমন ঘটেছে অনেক বেশি।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৭ সালের মোট অভিবাসীদের সংখ্যা ছিল চার লাখ ২১ হাজার ৭১১ জন, যা বেড়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ ৬২ হাজার ৯৫ জনে। দেশের ছয়টি জোন লিসবন, ফারো, পোর্তো, সেতুবাল, বেজা, লেরিয়া অঞ্চলগুলোতে বিশেষত অভিবাসী এবং বিদেশি ভোটারদের প্রায় ৮০ শতাংশই বসবাস করেন।
পর্তুগালে সাংবিধানিক অধিকার অনুযায়ী, দেশটিতে বসবাসকারী পর্তুগিজ ভাষাভাষীর কিছু দেশের এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিকরা নিবন্ধনের মাধ্যমে ভোটার হওয়ার অধিকার লাভ করেন। তবে দক্ষিণ এশিয়ার নাগরিকরা কেবলমাত্র পর্তুগিজ নাগরিকত্ব পাওয়ার পরই ভোটার হিসেবে নিবন্ধন করতে পারেন।
বেশিরভাগ অভিবাসী মূলত পর্তুগালকে একটি ট্রানজিট হিসেবে চিন্তা করেন। অর্থাৎ নাগরিকত্ব লাভের পর এখান থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বা বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে পাড়ি জমান। স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে আলাপ কর জানা যায়, প্রায় ৯৮ শতাংশ বাংলাদেশি পর্তুগিজ নাগরিকত্ব পাওয়ার পর অন্য দেশে চলে যান।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পর্তুগিজ নাগরিক রেজাউল বাসেত শিমুল জানান, বসবাসের জন্য পর্তুগাল পৃথিবীর স্বর্গরাজ্য। তবু মূলত ইংরেজি শিক্ষার প্রতি দুর্বলতা, পর্তুগিজ ভাষায় দক্ষতা অর্জন করতে না পারা এবং সন্তানের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে আরও বেশি সুযোগ সন্ধানের জন্য বাংলাদেশিরা পর্তুগিজ নাগরিকত্ব পাওয়ার পর অন্য দেশে পাড়ি জমান।
পর্তুগালে বর্তমানে দুজন প্রবাসী বাংলাদেশি রানা তাসলিম উদ্দিন ও শাহ আলম কাজল লিসবন এবং পোর্তো মিউনিসিপ্যালিটি নির্বাচনে দেশটির প্রধান রাজনৈতিক দল সোস্যালিস্ট পার্টির পক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যদিও তাদের নির্বাচনে জয়-পরাজয়ে বিদেশি ভোটারদের ভোট তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না। তবে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
বিদেশি ভোটার সম্পর্কে শাহ আলম কাজল বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় বাংলাদেশি ভোটারের সংখ্যা হাতেগোনা কয়েকজন মাত্র। এর কারণ অধিকাংশ বাংলাদেশিরা নাগরিকত্ব পেয়ে পর্তুগাল ছেড়েছেন। তবে যেহেতু আমরা সোস্যালিস্ট পার্টির পক্ষে নির্বাচন করছি সেক্ষেত্রে স্থানীয় নাগরিকদের ভোটে আমরা নির্বাচিত হব। তবে এ পর্যন্ত যেসব বাংলাদেশি বিগত দশকে পর্তুগালে এসেছেন, তারা যদি পর্তুগাল ছেড়ে না যেতেন তাহলে হয়ত চিত্রটা ভিন্ন হতো। আমরা আরও বেশি শক্তিশালী হতে পারতাম, এমনকি জাতীয় নির্বাচনে আমাদের পথ সুগম হতো।