রাঙামাটি প্রতিনিধি: রাঙামাটিতে জগদ্ধাত্রী পূজা উপলক্ষ্যে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী উৎসব সম্পন্ন হয়েছে। শহরের হ্যাপির মোড় সংলগ্ন রাঙামাটি জগদ্ধাত্রী মাতৃ মন্দির পরিচালনা কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের এ ধর্মীয় উৎসব শনিবার শুরু হয়ে তা শেষ হয় সোমবার রাতে। মন্দির পরিচালনা কমিটি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এদিকে উৎসব ঘিরে মন্দির সংলগ্ন রাঙামাটি-চট্টগ্রাম প্রধান সড়কের দীর্ঘ ফুতপাতের রাস্তাজুড়ে বসানো হয় জমজমাট মেলা। মেলা চলাকালে প্রতিদিন বিকাল থেকে মধ্য রাতব্যাপী অগণিত মানুষের ঢল নামে। জনারণ্যে পরিণত হয় শহরের বনরুপাবাজার থেকে কোর্টবিল্ডিং পর্যন্ত বিশাল এলাকাজুড়ে। এতে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে বলবৎ থাকা সরকারের স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হয়েছে উল্লেখ করে সচেতন মহল থেকে বলা হয়, রাঙামাটির জগদ্ধাত্রী মেলায় স্বাস্থবিধির কোনো বালাই ছিল না। পরিস্থিতি এমন হলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি আবারও বাড়বে।
মেলা ঘুরে দেখা যায়, মেলায় পোশাক, মনোহরি, জুতা, হাড়িপাতিল, নানা রকম খাবার-দাবার থেকে শুরু করে প্রচুর জিনিষের দোকানপাট বসানো হয়েছিল। মেলার কিছু শুকনো ভেজাল পন্য রং মিশ্রিত হলে মুল্য দ্বিগুন করেছে । ছিল ডাব্য ও নাগরদোলার। যেগুলোর সংখ্যা দেড় শতাধিক হবে বলে জানা গেছে। এদিকে মেলা চলাকালে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষার পাশাপাশি যানবাহন চলাচল ও সাধারণ মানুষের হাঁটাচলায় চরম বিঘœ ঘটে বলে জানান সাধারণ লোকজন। অনেকে বলেছেন, দেশে এখনও করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি রয়ে গেলেও মেলা বসিয়ে এ ধরনের জনসমাগম সৃষ্টির বিষয়টি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাঙামাটি জগদ্ধাত্রী মাতৃ মন্দির পরিচালনা কমিটির স্বপন মহাজন বলেন, শনিবার থেকে সোমবার রাতব্যাপী উৎসব চলার পর তা মঙ্গলবার ভোরে শেষ হয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে মন্দিরের ভেতরে মাস্ক ব্যবহারসহ সামাজিক দূরত্বতার ব্যবস্থা জোরদার ছিল। কয়েক দিন আগে থেকে প্রশাসনকে জানিয়ে পূজা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। মেলায় বসানো দোকানপাটগুলো মন্দির কমিটির ব্যবস্থাপনায় দেওয়া হয়েছে। দোকানের সঠিক সংখ্যা এ মুহূর্তে বলতে পারছি না- মনে হয় ৫৪টির মতো। আমরা শুধু রাস্তার একপাশে দোকান বসাতে দিয়েছি।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মীর মোদ্দাছ্ছের হোসেন বলেন, মেলার বিষয়ে পুলিশকে জানানো হয়নি। বিষয়টির খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মো.মিজানুর রহমান বলেন, রাঙামাটি জগদ্ধাত্রী মন্দিরে পূজা উৎসবের অনুমতি দেওয়া হলেও সেখানে মেলা আয়োজনের বিষয়ে অনুমতি দেওয়া হয়নি। সরকারের স্বাস্থ্যবিধি এখনও বহাল রয়েছে, তাই যে কোনো বড় ধরনের জনসমাগম সৃষ্টির পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।