1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

তাইওয়ান– আসিয়ানের সামরিক ঝুঁকি: নাইম ইসলাম নিবির

  • Update Time : বুধবার, ১০ আগস্ট, ২০২২
  • ৪২৫ Time View

তাইওয়ান– আসিয়ানের সামরিক ঝুঁকি

— নাইম ইসলাম নিবির

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন এ কথাই মনে করিয়ে দেয় যে, তাইওয়ানের ভাগ্য শেষ পর্যন্ত সামরিক শক্তি দ্বারা নির্ধারিত হবে কি না। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তাইওয়ানে সামরিক সঙ্ঘাতের ঝুঁকি আজ বিমূর্ত বা দূরবর্তী সম্ভাবনা নয়। বেইজিং তাইওয়ানকে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেখে, যা ‘এক চীন’ নীতি দ্বারা পরিচালিত। চায়না কমিউনিস্ট পার্টি, সিসিপির মৌলিক লক্ষ্য চীন-তাইওয়ানের একত্রীকরণ। মাও সেতুংয়ের পর থেকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এটি নেতাদের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি।

সিসিপির সিনিয়র নেতারা বলে থাকেন, শান্তিপূর্ণ ব্যবস্থা ব্যর্থ হলে একীকরণের জন্য সামরিক শক্তি ব্যবহার করা হবে। চীন ২০০৫ সালে বিচ্ছিন্নতাবিরোধী আইন পাস করে, যার ৮নং অনুচ্ছেদে সামরিক শক্তি প্রয়োগের আইনি যৌক্তিকতা সন্নিবেশিত রয়েছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত কিন গ্যাং আমেরিকানদের জানিয়েছেন, ‘চীন একত্রীকরণের জন্য অ-শান্তিপূর্ণ উপায় ছেড়ে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নয়।’

তাইওয়ানের বিরুদ্ধে পিআরসির চাপ প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সময় বেড়েছে এবং তাইওয়ান আন্তঃপ্রণালী বিরোধ সমাধানে শক্তি প্রয়োগের ন্যায্যতার প্রসঙ্গ সামনে এসেছে। শি’র ২০১৩ সালের বিবৃতিটি প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছিলেন, ইস্যুটি ‘প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলা উচিত নয়।’ একত্রীকরণ শি’র ‘চায়না ড্রিমের’ মূল উপাদান।

তাইওয়ানকে একীকরণে বাধ্য করা ও আক্রমণ করার জন্য পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) মোতায়েনের হুমকি দুই দশকের দীর্ঘ সমরাস্ত্র আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে জোরালো হয়েছে। তাইওয়ানের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলে চীনের বিমানবাহী রণতরীগুলোর নৌ-ট্রানজিটকে তাইওয়ানের সামরিক কর্মকর্তারা বলেন, ‘ঘেরাও মিশন’।

একীকরণের বিষয়ে বেইজিংয়ের আপসহীন অবস্থান এবং একীকরণের জন্য তাইওয়ানের জনসমর্থনকে উদ্দীপিত করার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্ররোচনা একটি অস্বস্তিকর স্থিতাবস্থা তৈরি করেছে। সামরিক শক্তি বাড়ার সাথে সাথে বেইজিংকে তাইওয়ানের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগে বিরত রাখা আরো চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। যদি বেইজিং তাইওয়ান সমস্যার সামরিক সমাধান বেছে নেয়; জাপান ও অস্ট্রেলিয়া তাইওয়ান আন্তঃপ্রণালী সঙ্ঘাতের ঝুঁকি ও পরিণতিতে সরাসরি অংশ নিয়ে আরো জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে।

২০২১ সালের অস্ট্রেলিয়া-যুক্তরাজ্য-মার্কিন অকাস চুক্তির অংশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়াকে টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিনসহ দূরপাল্লার অস্ত্র দেয়া দৃশ্যত চীনকে শক্তি ব্যবহার থেকে বিরত রাখার প্রচেষ্টার অংশ। কিন্তু তা মোটেই চীনকে দমন করতে পারবে না। অকাস চুক্তি অনুসারে সাবমেরিন সমৃদ্ধ হতে অস্ট্রেলিয়ার ১২ বছর দরকার; এ সময়ের মধ্যে অনেক ঘটনা ঘটে পরিস্থিতির হিসাব পাল্টে দিতে পারে। চীনও এতগুলো বছর বসে বসে আঙুল চুষবে না। জাপানও চীন বিরোধিতায় অগ্রগামী। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেছিলেন, ‘তাইওয়ানের জরুরি অবস্থা, জাপানের জন্যও জরুরি অবস্থা এবং সে জন্যই তা জাপান-মার্কিন জোটের জন্যও জরুরি অবস্থা।’

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো এখন পর্যন্ত তাইওয়ান আন্তঃপ্রণালী ইস্যুতে জড়িয়ে পড়েনি, পরিবর্তে অনানুষ্ঠানিক ভিত্তিতে তাইওয়ানের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক সীমিত রাখতে পছন্দ করছে। সিঙ্গাপুর একটি উল্লেখযোগ্য ব্যতিক্রম, তাইওয়ানের সাথে তার সামরিক সম্পর্ক রয়েছে। তাইওয়ানের সামরিক সুবিধাগুলো সিঙ্গাপুর ব্যবহার করতে পারে। ১৯৯২ সালে সিঙ্গাপুর-পিআরসি কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার আগেই এই সম্পর্ক হয়। এখানে মনে রাখতে হবে যে ইসরাইল সিঙ্গাপুরকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য একটি সামরিক হাব হিসেবে রেখেছে এবং ইসরাইল অনেক অস্ত্রসম্ভার এখানে তৈরি ও মজুদ করে রেখেছে, যদিও সিঙ্গাপুর এখনো কোনো সামরিক ভীতি ও জটিলতার মধ্যে নেই।
যা হোক, সিঙ্গাপুর তাইওয়ানকে কোনো নিরাপত্তা গ্যারান্টি দেয় না বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তাইওয়ান রিলেশনস অ্যাক্টের অনুরূপ কোনো আইনও নেই। মার্কিন-চীন উত্তেজনা সম্পর্কে উদ্বেগ বিষয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সিঙ্গাপুর সবচেয়ে স্পষ্ট, যার মধ্যে তাইওয়ান ইস্যুও রয়েছে।

সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং ২০১৫ সালের শাংগ্রিলা সংলাপে সংক্ষেপে বলেছিলেন, ‘কোনো দেশই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে পক্ষ বেছে নিতে চায় না’, পক্ষ নির্বাচন না করা জনপ্রিয় ধারণা, তবে এটি সিঙ্গাপুরের নিজস্ব মান এবং এজেন্সিকে বিবেচনা করে না। কিছু পরিস্থিতিতে, সিঙ্গাপুর তাদের নিজস্ব স্বার্থের ওপর ভিত্তি করে নীতি তৈরি করবে, এটি পিআরসি বা মার্কিন পছন্দগুলো বিবেচনায় আনবে না।

অধিকন্তু তাইওয়ানের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কোনো রাষ্ট্র বা জাতিসঙ্ঘের মর্যাদার সাথে কূটনৈতিক সম্পর্কের অভাব রয়েছে, যা তার সার্বভৌমত্বকে অস্পষ্ট করে তোলে। স্বীকৃতির এ অভাব সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোকে তাইওয়ান আন্তঃপ্রণালী সঙ্ঘাতে পক্ষ নির্বাচন না করার জন্য একটি ন্যায্যতা দিয়েছে মনে করা হয়। যদিও আসিয়ানকে বাহ্যিক নিরাপত্তা হুমকির মুখোমুখি হওয়া বা তার সদস্য রাষ্ট্রগুলোর বাইরে আগ্রাসন প্রতিরোধের জন্য ডিজাইন করা হয়নি, তবে সঙ্কটের ক্ষেত্রে সংযমের সাথে কাজ করার জন্য সব পক্ষকে আহ্বান জানাতে পারে।
চীন যদি শান্তিপূর্ণভাবে একীকরণের প্রত্যাশা হারিয়ে ফেলে এবং তাইওয়ানের ওপর সামরিক শক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত কার্যকর করে, তবে নিঃসন্দেহে তা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য নেতিবাচক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তার ঝুঁকি সৃষ্টি করবে।

তাইওয়ান আন্তঃপ্রণালী সামরিক দ্বন্দ্ব আসিয়ানের সবচেয়ে মৌলিক ভিত্তিকে দুর্বল করে দেয়। সহিংসতার পরিবর্তে বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানই, যা ১৯৭৬ সালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অ্যামিটি অ্যান্ড কো-অপারেশন চুক্তির (টিএসি) অনুচ্ছেদ ১৩ এ বর্ণিত হয়েছে, আসিয়ানের ভিত্তি। এটি সম্ভব যে আসিয়ান সব পক্ষকে আত্মসংযম অনুশীলন করার এবং চীনকে বাদ না দিয়ে সহিংসতা এড়ানোর আহ্বান জানাবে। তবে তাইওয়ানের বিরুদ্ধে বেইজিংয়ের শক্তি প্রয়োগের হুমকি আসিয়ানের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে কৌশলগত উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলবে, বিশেষ করে যাদের চীনের সাথে নিজস্ব আঞ্চলিক বিরোধ রয়েছে। বেইজিং সঙ্ঘাত শুরু করলে অনেক বিভ্রান্তের সৃষ্টি হবে। শেষ পর্যন্ত তাদের নিজস্ব বিরোধের ওপর চীনা সামরিক জবরদস্তির শিকার হওয়ারও শঙ্কা দেখা দেবে।

ফিলিপাইনের নিরাপত্তা পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে যদি সঙ্ঘাত শুরু হয়। ‘বাশি চ্যানেল’টি চীনা নৌবাহিনীর জাহাজগুলোর জন্য কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ চেক পয়েন্ট, বিশেষ করে দক্ষিণ চীন সাগরে পিএলএর নৌবাহিনীর সাবমেরিনগুলোর জন্য। যুদ্ধের কমান্ডাররা চ্যানেলের মধ্যে এবং তার আশপাশের স্থানগুলোতে আধিপত্য বিস্তার করতে চাইবে। ফিলিপাইনের আঞ্চলিক আকাশ ও সমুদ্রসীমা নিঃসন্দেহে সঙ্ঘাতকে সরাসরি প্রভাবিত করবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনা নৌ ও বিমানবাহিনী তাইওয়ানের চার পাশে একটি ওয়ার জোনের মধ্যে শত্রুতা সীমাবদ্ধ রাখার সম্ভাবনা কম। তাইওয়ানের আন্তঃপ্রণালী সঙ্ঘাত নিঃসন্দেহে অনিচ্ছা সত্ত্বেও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকেও অন্তর্ভুক্ত করবে।

যেসব দেশ এ অঞ্চলে একটি টেকসই মার্কিন সামরিক উপস্থিতি চায়, তারা বেইজিংয়ের মুখোমুখি হয়ে পড়তে পারে। মার্কিন সামরিক বাহিনীকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য বা এ অঞ্চলে তার কার্যক্রম হ্রাস করার জন্য ছোট দেশগুলো আরো সক্রিয়ভাবে চাপের মধ্যে পড়বে। তাইওয়ানে সামরিক সাফল্যের ফলে চীন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রভাবের একটি ক্ষেত্র প্রতিষ্ঠা করবে। এটি অনেক কঠিন বিষয়।

সাহসী চীনকে প্রতিরোধ করা, সফলভাবে তাইওয়ান দখল করার জন্য সামরিক শক্তির প্রয়োগ চীনের প্রতিপক্ষ মার্কিন শক্তিকে ভিন্ন কৌশল গ্রহণে বাধ্য করবে। তদুপরি দক্ষিণ চীন সাগর ও এর সমুদ্রপথগুলোর ওপর চীনের আধিপত্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সব রাজ্যের পাশাপাশি দক্ষিণ চীন সাগরে সমুদ্র লেনের ওপর নির্ভরশীলরাজ্যগুলোর নিরাপত্তা ও অর্থনীতিকে প্রভাবিত করবে।

চীন যদি তাইওয়ানকে একীভূত করার জন্য পিএলএকে একত্রিত করে এবং ব্যর্থ হয়, তবে সেটি কালো মেঘের মতো চীনকে বর্তমান রাশিয়ার মতো অনেক দুর্ভোগের গহ্বরে পতিত করবে।
তাইওয়ানের অর্থনীতি বড়, জিডিপিতে বিশ্বের ২৩তম স্থানে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কেবল ইন্দোনেশিয়ার পেছনে। এর শিল্পগুলো আঞ্চলিক সরবরাহ চেইনে সংহত করছে এবং তাইওয়ান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগের একটি প্রধান উৎস।

একটি দ্বন্দ্ব বা ছোটখাটো লড়াই কেবল তাইওয়ানের ওপর সরবরাহ চেইন এবং অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপকে ব্যাহত করবে না, তবে চীনে তাইওয়ানের বিনিয়োগ করা সংস্থাগুলো সম্ভবত মূল ভূখণ্ডের শ্রমিকদের অর্থ প্রদানসহ তাদের ক্রিয়াকলাপ হ্রাস করবে; চীন ও তাইওয়ান উভয় ক্ষেত্রেই সমন্বিত উৎপাদন ঘাঁটিগুলোর ওপর নির্ভর করে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় ও বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনকে আরো ব্যাহত করবে।

তার চেয়েও বড় কথা, চীনজুড়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাপক সামরিক সমাবেশের প্রচেষ্টার কারণে বিঘিœত হবে। বাণিজ্যিক বিমান চালনা এবং সামুদ্রিক বাণিজ্য প্রভাবিত হবে; বিমান ও জাহাজগুলো সঙ্ঘাতের অঞ্চল থেকে দূরে আবার রুট করা হবে এবং যুদ্ধকালীন ঝুঁকি বীমা বৃদ্ধি পাবে, যখন হোর্ডিং ও অনিশ্চয়তাও ব্যয় বাড়িয়ে তুলবে, মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে।

আরেকটি উদ্বেগ হলো তাইওয়ান ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে শ্রম গতিশীলতা নিয়ে, যা একটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা উভয়ই। তাইওয়ানের শ্রম মন্ত্রণালয়ের মতে, কোভিড-১৯ মহামারীর আগে তাইওয়ানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্থাৎ ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের শ্রমিক ছিল বিপুলসংখ্যক। সরকারের অভিবাসন নীতি সংস্কারের পর এ সংখ্যাটি বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। তাইওয়ান তাই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় রেমিট্যান্সের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। তাইওয়ান সঙ্ঘাতে সেখানে অবস্থানরত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর বিপুলসংখ্যক নাগরিক হুমকির মুখোমুখি হবে।

বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর একটি রেড লাইন থাকা উচিত মনে করা হচ্ছে, ঠিক যেমন আসিয়ানের একটি নীতি রয়েছে। আসিয়ান একটি সহযোগিতামূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক ধারণা, সেই সাথে এর সেন্টার পয়েন্ট বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আরো শক্তিশালী হওয়া দরকার, সে হিসাবে আসিয়ানকে ন্যাটোর মতো সজ্জিত করা প্রয়োজন বলেও অনেকে মনে করেন।

আসিয়ান ও দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর পুতিনকে নিরুৎসাহিত করার প্রচেষ্টায় সরাসরি হস্তক্ষেপ ও অবদান রাখতে খুব কম উৎসাহ দেখা গেছে। ইউরোপের একটি সামরিক দ্বন্দ্ব নিঃসন্দেহে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ওপর প্রভাব ফেলছে, অর্থনৈতিক বিঘ্ন ও মুদ্রাস্ফীতির চাপের আদলে।

১৯৫৬ সালে স্নায়ুযুদ্ধের শুরুতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন ফস্টার ডুলস ঘোষণা করেছিলেন, নিরপেক্ষতা একটি ‘অনৈতিক ও অদূরদর্শী ধারণা’, কারণ তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে প্রতিযোগিতায় আমেরিকার মিত্রদের একত্রিত করার চেষ্টা করেছিলেন। রাষ্ট্রপতি ডুইট ডি. আইজেনহাওয়ার, এ দাবিটি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, ভারত ও অন্যান্য দেশের জোট নিরপেক্ষতার প্রতি প্রতিশ্রুতিকে স্বীকৃতি দিয়ে উল্লেখ করেছিলেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেই একসময় নিরপেক্ষ ছিল এবং ইউরোপীয় দ্বন্দ্বে জড়িত হওয়া এড়িয়ে গিয়েছিল।

দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলো কিভাবে তাইওয়ান দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়া এড়াতে, নিরপেক্ষ থাকতে বা তিনটি বৃহত্তম অর্থনীতির সাথে দ্বন্দ্বে জড়িত পক্ষগুলো বেছে নিতে পারে, প্রশ্ন তা নয়। প্রশ্ন হচ্ছে, তারা কি এমন মূল্যায়ন করতে পারে যে, তাদের দোরগোড়ায় যুদ্ধ একটি দূরবর্তী সমস্যা এবং তাদের যেকোনো মূল্যে দূরে থাকতে হবে? অথবা তারা চীনকে শক্তি প্রয়োগ থেকে বিরত রাখার প্রচেষ্টায় অবদান রাখতে বেইজিংয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করে সব পক্ষের সাথে বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তির দিকে এগোবে। মূল দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় স্বার্থ রক্ষায় তারা কতটুকু প্রস্তুত তার হিসাব-নিকাশ খুবই জরুরি।

নাইম ইসলাম নিবির : প্রধানমন্ত্রীর স্নেহধন্য রাজনীতিক ও কলামিস্ট
nayemulislamnayem148@gmail.com

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..