1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : Rakibul Hasan Shanto : Rakibul Hasan Shanto
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

বেকারত্ব দূর করতে একজন সামরিক কর্মকর্তার ভাবনা

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৬ জুন, ২০২০
  • ৪২৪ Time View

রাঙ্গাবালী,পটুয়াখালী প্রতিনিধি : বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা বেকারত্ব। এই বেকারত্ব মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে আমরা কথা বলেছি রাঙ্গাবালী উপজেলাবাসীর গর্ব বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ তোফায়েল আহমেদ, পিএসসি (অবঃ) এর সাথে।

তিনি দেশের ক্লান্তিকালে মহামারি করোনা ভাইরাস থেকে সচেতন থাকার জন্য দেশেবাসীকে আহ্বান জানান।

তিনি বেকারত্ব থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন যে,

শুরুতেই বলে নেয়া ভালো যে আমি কোন আন্টপ্রেরনার কিংবা বেকারত্ব দূর করার ডাক্তার কিংবা বিশেষজ্ঞ নই।

একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু মতামত এবং সুপারিশ উপস্থাপন করব আপনার সাথে এবং সুপারিশ গুলো বাস্তবায়নের জন্য কিছু পদ্ধতিও আলোচনা করবো।

এই বলাটা শুধুমাত্র বেকারদের জন্য নয়। যারা বর্তমান অবস্থানে সন্তুষ্ট নয় এবং আরও অনেক কিছু করতে আগ্রহী তাঁরাও এখান থেকে কিছু দিক নির্দেশনা পেতে পারেন।

একটা প্রচলিত কথা আছে যে, “সামর্থ্যবান মানুষ তাকায় তার বাহুর দিকে; আর অকর্মারা তাকায় তার কপালের দিকে।” ‘আমার ভাগ্যে নেই তাই কোন কিছু হচ্ছে না’, এটা না বলে বরং আমাদের বলতে হবে; ‘নিশ্চয়ই আমার চেষ্টার কমতি ছিল, আমার সাধ্যের সবটুকু নিয়োগ করলে সাফল্য ধরা দিতে বাধ্য।’

সবচেয়ে প্রথম কাজ হচ্ছে অর্জন করা সম্ভব কিন্তু একদম সহজ নয় আবার ভীষণ কঠিনও নয়, এমন একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করা। অর্থাৎ চ্যালেন্জিং টার্গেট ঠিক কর। সেটা চাকরি হতে পারে, ব‌্যবসা হতে পারে অথবা অন্য কিছু হতে পারে। এটা নির্ভর করে প্রত্যেকের নিজস্ব শিক্ষা, আর্থসামাজিক অবস্থা, অভিজ্ঞতা, জীবনের স্বপ্ন, আরও অনেক কিছুর উপর।

আমার নিজের কথা বলি। ক্লাস নাইনে পড়া অবস্থায় যখন আমাদের সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি আমার বাবা যখন মারা যান, তখন আমাকে দ্রুত নিজের পায়ে দাঁড়ানোর মত‌ একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হয়েছে। আমার বাবার ইচ্ছে ছিল আমি যেন ডাক্তার হয়ে মানব সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করি। কিন্তু ডাক্তারি পড়তে যে পরিমান খরচ এবং সময় লাগবে, তা আমার পরিবারের পক্ষে যোগান দেয়া সম্ভব ছিল না। ফলে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই আমি আর্মি, এয়ারফোর্স, মেরিন ইত্যাদির জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে শুরু করে ছিলাম।

একটা কথা আমি আমার নিজের জীবন থেকে উপলদ্ধি করেছি যে, আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত, চাকরি নেয়া নয় বরং চাকরি দেয়া।

লক্ষ্য ঠিক করার পরের ধাপ হলো লক্ষ্য অর্জনের জন্য নিজেকে তৈরি করা। নিজের স্বপ্ন পূরণের জন্য এবং লক্ষ্য অর্জনের জন্য সাধ্যের সবটুকু দিয়ে নিজেকে তৈরি করতে হবে।

সকলের সামর্থ্য একরকম থাকে না। অনেকে মেধার কথা বলেন।‌ আমি নিজেকে কখনো’ই মেধাবী মন করিনি। আমি বিশ্বাস করি কঠোর পরিশ্রম এর উপর।

যারা এখনো শিক্ষা জীবন শেষ করেননি তাদের জন্য বলছি, কঠোর পরিশ্রম করে এমন ফলাফল অর্জন করার চেষ্টা করুন যেন আপনার চাকরি খুঁজতে না হয়; বরং চাকরি যেন আপনাকে খুঁজে।

আর যারা সেই সুযোগে হাড়িয়ে ফেলেছেন তাদের জন্য বলছি, এখন ও সবকিছু শেষ হয়ে যায়নি। অনেক কিছু করার আছে –

*প্রথমত, নিজেকে নতুন করে যুগোপযোগী করে তৈরি করুন। নতুন নতুন প্রযুক্তি যেমন কম্পিউটার নলেজ, মেডিকেল ইকুইপমেন্ট নলেজ, নতুন ব্যবসা বাণিজ্য সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জন, একাউন্টিং, ট্যাক্স ফাইলিং, নানান কিছু শেখা যায়।

*দ্বিতীয়ত, দেশে বিভিন্ন অঞ্চলে মাটি এবং পানির কোন অভাব নেই। যা কিছুই আমরা মাটিতে থ্রো করি, তাই কিন্তু অল্প পরিশ্রমে গ্ৰো করে । নতুন পদ্ধতিতে বিভিন্ন দামি সবজি যেমন ক্যাপসিকাম, বেবিকর্ন, ব্রোকলি ইত্যাদি উৎপাদন করে শহরে বিক্রি করে অনেক টাকা উপার্জন করা সম্ভব।

*তৃতীয়ত, আজকাল গ্রামে নানান রকম কাজে নিজেকে নিয়োজিত করা যায়। যেমন হাউজ ওয়ারিং, রাজমিস্ত্রির কাজ তদারকি, ওয়েল্ডিং, মোবাইল, কম্পিউটার, রেডিও-টিভি মেরামত ইত্যাদি নানান কিছু করা যায়।

*চতুর্থত, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনেক পুকুর এবং জলাশয় আছে। সেগুলোতে উন্নত পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা যায়। অ্যাকুরিয়ামের রঙিন মাছ চাষ করে কোটিপতি হয়ে গেছেন অনেকে।

*পঞ্চমত, বিভিন্ন রকমের ফল এবং এবং মসলার গাছ লাগানো যায়। যেমন তেজপাতা, দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচি, আদা, হলুদ ইত্যাদি। এখন বর্ষাকাল, গাছ লাগানোর জন্য এখনই সময়।

*ষষ্ঠত, মহিলারা বুটিক, টাইডাই, কুটির শিল্প ও নানান কিছু করতে পারে। যা কাজে লাগিয়ে অর্থ আয় করা যায়।

*সপ্তমত, পশুপালন (ছাগল, ভেড়া), গরু মোটাতাজাকরণ, দূগ্ধ শিল্প (মাখন, চীজ, ঘি ইত্যাদি) একটা বড় বানিজ্য এলাকা।

*অষ্টমত, শিক্ষা সহায়তা পেশা হিসেবে নেয়া। আমাদের স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের উন্নত তথা ঢাকার লেভেলে আনার জন্যে ভালো কোচিং এর খুব দরকার।

অর্থাৎ আমরা যদি একটু বুদ্ধি খাটিয়ে একটু কষ্ট করি; তাহলেই বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে পারি।

অমুক আমার জন্য ওটা করল না, অমুকের কাছে গিয়েছিলাম, আমাকে সহযোগিতা করল না; এগুলো বলে লাভ নেই। কারণ দিনশেষে আমাদের জীবন, একান্তই আমাদের। আপনি যদি সফল হন, সেই সাফল্য আপনার। আপনি যদি ব্যর্থ হন, সেই ব্যর্থতার জন্য আপনি পৃথিবীর সবাইকে দায়ী করতে পারেন; ব্যর্থ মানুষ কিন্তু আপনি নিজেই।

সুতরাং কাউকে দোষারোপ করে নয়, নিজের সামর্থ্যের উপর আস্থা রাখতে হবে। বিশ্বাস রাখুন, “অন্যরা পারলে, আপনিও পারবেন।”

নষ্ট করার মতো সময় আর এক মিনিটও নেই, চলুন কাজে লেগে যাই। অনেকে হয়তো বলবেন মূলধন নেই। এটা আসলে একটা অজুহাত।

পৃথিবীতে অনেক ব্যবসা-বাণিজ্য আছে যেগুলোর জন্য মূলধন প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজন হয় বুদ্ধি, প্রয়োজন হয় কঠিন পরিশ্রম, প্রয়োজন হয় কমিটমেন্ট রাখতে পারা, প্রয়োজন হয় নিজেকে প্রেজেন্ট করা; ইত্যাদি।

তিনি আরো বলেন, ভালো পরিকল্পনা হলে অনেক ব্যাংক এবং এনজিও সহায়তা করতে পারে।

আজ আমি এ পর্যন্তই বলবো।

এরপর আমি আপনাদের বিভিন্ন কমেন্ট, পরামর্শ, পরিকল্পনা, আলোচনা, সমালোচনা এবং ক্রিটিসাইজ শুনার অপেক্ষায় থাকবো।
ধন্যবাদ।

রিপোর্টার:সাইফুল ইসলাম সায়েম।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..